ইসলামে এসো, শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করবে

Daily Inqilab মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক

১০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০১ এএম

বর্তমান যুগের শিক্ষা ও সংস্কৃতির ‘আলোক’প্রাপ্ত ব্যক্তি ও সমাজের মাঝে সংযম ও সুনীতির ব্যাপক অনুপস্থিতি, সত্য কথন ও সত্য-গ্রহণে ভীরুতা, গোষ্ঠি ও স¤প্রদায়গত সংকীর্ণতা, পদ-পদবীর মোহ, অর্থ ও ক্ষমতার লালসা, প্রতিপক্ষের প্রতি চরম অসহিষ্ণুতা, অনৈতিকতা ও উচ্ছৃঙ্খলতায় উৎসাহ দান এবং এসব কিছু সত্তে¡ও মৌখিক শালীনতার চর্চা এ সভ্যতাকে একটি ব্যর্থ সভ্যতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ফলে ইসলামের সত্য ও সরল আদর্শের প্রয়োজন ও প্রাসঙ্গিকতা যেন ‘দৃষ্টিগ্রাহ্য’ হয়ে গিয়েছে।

এ অবস্থায় ইসলাম তার পক্ষ-বিপক্ষ উভয় শিবিরকে আহবান করে, আদর্শের শীতল ছায়ায় আশ্রয় নেয়ার। ইসলাম তার বিরোধীদের বলে, ‘আসলিম তাসলাম’- ইসলামে এসো, শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করবে। সন্ত্রাস, দুর্নীতি, কপটতা ও মিথ্যাচারের পরিবর্তে সততা, সরলতা, শান্তি ও শালীনতার নিশ্চয়তা একমাত্র ইসলামেই আছে। তবে এই সত্য উপলব্ধি করতে হলে তোমাকে প্রগতি ও আধুনিকতার মিথ্যা অভিমান ত্যাগ করে তোমায় বাস্তব অবস্থা চিন্তা করতে হবে।

তথাকথিত সভ্যতার মুখোশ সরিয়ে বাস্তবতার আয়নায় একবার নিজের মুখ দেখ, তাহলে দেখবে, দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং মিথ্যাচার ও অবিশ্বাসের কালিমায় তা কেমন কালিমালিপ্ত হয়ে আছে। এ মিথ্যা অভিমানের মুখোশ দিয়ে এত কালিমা আর কতকাল ঢেকে রাখবে? ইসলাম তো এসেছে মুখোশ বওয়ার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য এবং সব কলঙ্ক থেকে পবিত্র করার জন্য।

একইভাবে তাকওয়ার দ্বীন ইসলাম তার অনুসারীদের বলে, ‘মুমিনগণ! পুরোপুরি ইসলামে দাখিল হও, শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন।’ যারা মুমিন, যাদের আল্লাহ ঈমানের দৌলত নসীব করেছেন তাদের তো ভুলে গেলে চলবে না যে, ইসলাম বিরোধী শিবিরে তারাই ইসলামের মুখপাত্র। তাদের আচরণ-উচ্চারণ দ্বারাই ইসলামের মূল্যায়ন করা হবে। আর বর্ণচোরা শ্রেণি তাদেরকে আঘাত করেই ইসলামকে ঘায়েল করার সুখ পেতে চাইবে।

সুতরাং মুমিনদের আচরণ হতে হবে সতর্ক ও ইসলামের বিধানসম্মত। তাদের উচ্চারণ হতে হবে সংযত, শালীন এবং ইসলামের আদব ও শালীনতার উত্তম দৃষ্টান্ত। এক্ষেত্রে আল্লাহর নবীর (স.) সীরাত আমাদের জন্য আদর্শ। একইভাবে তাদের লেনদেন, সামাজিকতা, শত্রæতা-মিত্রতা সবই হতে হবে কুরআন-সুন্নাহর আদব ও আহকামে পুরোপুরি উত্তীর্ণ। এককথায় জীবনের সব ক্ষেত্রে ইসলামী বিধান ও আচরণবিধি আমাদের পূর্ণরূপে অনুসরণ করতে হলে এবং সর্বক্ষেত্রে সংযম ও আত্মনিয়ন্ত্রণের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করতে হবে।

এ দেশে, এই সমাজে যখন হক-বাতিলের দ্বন্দ প্রকাশ্য রূপ ধারণ করেছে তখন ইসলামের অনুসারী সর্বস্তরের মানুষের সর্বোচ্চ সংযম ও সতর্কতার পরিচয় দিতে হবে। এ দেশে যারা ইসলামী শিক্ষার ধারক-বাহক, বিশেষত কওমী মাদরাসার আলিম-তালিবে ইলমের অবস্থান তো এখন তরবারীর ফলার উপর। একটি সময় ছিল যখন ‘কওমী’ শব্দটির সঙ্গেও সমাজের একটি শ্রেণির পরিচয় ছিল না; কিন্তু সময়ের বিবর্তনে তাঁরা উঠে এসেছেন সর্বস্তরের মানুষের আগ্রহ ও আলোচনায়।

এ অবস্থা ও অবস্থানের নাযুকতা উপলব্ধি করা অতি প্রয়োজন। এখন সংযম ও সতর্কতার প্রয়োজন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। মনে রাখতে হবে, কোটি কোটি কৌতুহলী চোখ আমাদের আচরণ-উচ্চারণ পর্যবেক্ষণ করছে। আমরা যদি কুরআনী শিক্ষা ও অনুশীলনে অভ্যস্ত হয়ে থাকি তবে তো ইন শা-আল্লাহ কোনো ভয় নেই। নতুবা সময় এসেছে পূর্ণ সংযমে অভ্যস্ত হওয়ার- চিন্তায়, চেতনায়, কর্মে, শব্দে, বাক্যে, বক্তব্যে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। (আমীন)

 

 


বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

জীবিতদের নিকট মৃতব্যক্তির হক-২
জীবিতদের নিকট মৃত ব্যক্তির হক-১
মুমিন হওয়ার অন্যতম প্রধান শর্ত রাসূলের প্রতি ঈমান-২
মুমিন হওয়ার অন্যতম প্রধান শর্ত রাসূলের প্রতি ঈমান-১
সন্তানদের নেক আমলের উৎসাহ প্রদান
আরও
X
  

আরও পড়ুন

জামায়াত নেতা আজহারুলের মুক্তি দাবিতে নোয়াখালীতে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ

জামায়াত নেতা আজহারুলের মুক্তি দাবিতে নোয়াখালীতে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ

কিশোরগঞ্জে জাতীয় বিজ্ঞানমেলা ও অলিম্পিয়াড ‌‌আয়োজ‌নে প্রস্তু‌তিমূলক সভা অনু‌ষ্ঠিত

কিশোরগঞ্জে জাতীয় বিজ্ঞানমেলা ও অলিম্পিয়াড ‌‌আয়োজ‌নে প্রস্তু‌তিমূলক সভা অনু‌ষ্ঠিত

পটুয়াখালীতে তালাকপ্রাপ্তা এক মহিলা গণধর্ষণের শিকার

পটুয়াখালীতে তালাকপ্রাপ্তা এক মহিলা গণধর্ষণের শিকার

নোয়াখালীতে কারাগারের ১৮ ফুট দেয়াল টপকে আসামির পালানোর চেষ্টা, ভিডিও ভাইরাল

নোয়াখালীতে কারাগারের ১৮ ফুট দেয়াল টপকে আসামির পালানোর চেষ্টা, ভিডিও ভাইরাল

‘বিতর্কিত কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করে কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে’

‘বিতর্কিত কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করে কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে’

কুষ্টিয়ায় নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় মামলা

কুষ্টিয়ায় নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় মামলা

ইরানের কাসেম ক্ষেপণাস্ত্র যেকারণে একটি সামরিক সম্পদ

ইরানের কাসেম ক্ষেপণাস্ত্র যেকারণে একটি সামরিক সম্পদ

বিশ্ব যুব ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় ইয়াজদানির স্বর্ণ জয়

বিশ্ব যুব ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় ইয়াজদানির স্বর্ণ জয়

কীসের অপারেশন সিঁদুর, মুখ দিয়ে খারাপ কথা বের হবে : কবীর সুমন

কীসের অপারেশন সিঁদুর, মুখ দিয়ে খারাপ কথা বের হবে : কবীর সুমন

তিন দফা দাবিতে ৯ জেলায় ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ

তিন দফা দাবিতে ৯ জেলায় ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ

বিজিএমইএ নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণা করলো ফোরাম জোট

বিজিএমইএ নির্বাচনে প্যানেল ঘোষণা করলো ফোরাম জোট

আপাতত গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়াবে না সরকার: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা

আপাতত গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়াবে না সরকার: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা

শ্রমিক আন্দোলন: আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা ও গঠনমূলক সংলাপের প্রতিশ্রুতি বিএটি বাংলাদেশের

শ্রমিক আন্দোলন: আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা ও গঠনমূলক সংলাপের প্রতিশ্রুতি বিএটি বাংলাদেশের

রকেট ‘বিদ্রোহী’ নামক বানিজ্যিক ভিত্তিতে দেশের প্রথম ময়মনসিংহে প্রদর্শন

রকেট ‘বিদ্রোহী’ নামক বানিজ্যিক ভিত্তিতে দেশের প্রথম ময়মনসিংহে প্রদর্শন

চুয়াডাঙ্গার ভারত সীমান্তবর্তী হরিপুর থেকে ৩টি স্বর্ণের বারসহ এক ব্যক্তিকে আটক করেছে বিজিবি

চুয়াডাঙ্গার ভারত সীমান্তবর্তী হরিপুর থেকে ৩টি স্বর্ণের বারসহ এক ব্যক্তিকে আটক করেছে বিজিবি

টেস্টকে বিদায় বললেন রোহিত

টেস্টকে বিদায় বললেন রোহিত

গাজীপুরে বাজারে নাগরিক ঐক্যের ব্যানারে অস্ত্রসহ মিছিল, আটক ২

গাজীপুরে বাজারে নাগরিক ঐক্যের ব্যানারে অস্ত্রসহ মিছিল, আটক ২

এটিএম আজহারের মুক্তি না দিলে মার্স পর জাস্টিস কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে

এটিএম আজহারের মুক্তি না দিলে মার্স পর জাস্টিস কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে

ইউনাইটেডে 'ভালো আছেন' গারাঞ্চো

ইউনাইটেডে 'ভালো আছেন' গারাঞ্চো

সখিপুরে এক ভূয়া পশু চিকিৎসককে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল জরিমানা

সখিপুরে এক ভূয়া পশু চিকিৎসককে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল জরিমানা